এইচ. এম. শহীদ, পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় যৌতুকের জন্য স্বামীর নৃশংস চুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন উম্মে হাফছা তুহি (১৮)। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে চকরিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড মাদ্রাসাপাড়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত উম্মে হাফছা তুহি স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল হামিদের মেয়ে। ঘাতক স্বামী শওকত হাসান মেহেদী (২৩) চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৌ আবুল হাশেমের পুত্র।
বিয়ের পর থেকেই নির্যাতন:
নিহতের পিতা সাংবাদিক আব্দুল হামিদ জানান, আট মাস আগে তুহির সঙ্গে শওকত হাসান মেহেদীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তুহিকে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছিল। এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তুহি একপর্যায়ে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন।
হত্যাকাণ্ডের বিবরণ:
শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বাড়ির পুরুষ সদস্যরা মসজিদে গেলে ঘাতক শওকত ফাঁকা বাড়িতে প্রবেশ করে। তুহিকে উপর্যুপরি চুরিকাঘাত করে হত্যা করে। তুহির মা পারভীন আক্তার (৩৮) মেয়েকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও নির্মমভাবে আঘাত করা হয়।
গুরুতর আহত পারভীন আক্তারকে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
প্রেম থেকে নৃশংসতায় রূপান্তর:
শওকত হাসান মেহেদী তাদের বিয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) স্ত্রীর সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশন দেন: "তুমি আমার অনেক শখের খুঁজে পাওয়া এক প্রজাপতি।" অথচ মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে এই সম্পর্ক ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়।
আইনি ব্যবস্থা ও তদন্ত:
এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক শওকতের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল ঘটনার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনার ফলে আবারও যৌতুকের অভিশাপ এবং পারিবারিক সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। সমাজে এমন নির্যাতন রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
No comments:
Post a Comment