ওসমান হোসাইন, কর্ণফুলী প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষের অংশগ্রহণে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জানাজা শেষে সুন্নিয়তের নক্ষত্র, প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, শিক্ষাগুরু মাওলানা আবুল হাশেম (মাঃজিঃআঃ)-এর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেল ৩টায় কর্ণফুলী আবদুল জলিল চৌধুরী কলেজ মাঠে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। হাজারো আলেমের শিক্ষক মাওলানা আবুল হাশেম (মাঃজিঃআঃ)-এর শেষ বিদায় জানাতে জনতার ঢলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। জানাজার মাঠ পূর্ণ হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে জনতার উপস্থিতি।
মরহুমের বড় পুত্র মাওলানা মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানাজায় ইমামতি করেন। জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর পিতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন। এ সময় জানাজায় অংশ নেওয়া লাখো মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন। মরহুমের অগণিত ছাত্র শোকের মাতম করতে থাকেন, সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ।
জানাজার পূর্বে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ কাজী মঈনুদ্দীন আশরাফী, অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন হাশেমী, মাওলানা মোহাম্মদ আবুল আসাদ জোবায়ের রিজভী, মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ রেজভী, মাওলানা মোহাম্মদ আবুল কালাম আমেরি, মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল নোমানী, মাওলানা মোহাম্মদ সাইদ অহিদী, ড. মাওলানা মোহাম্মদ খলিলুর রহমান প্রমুখ।
বেলা ১২টায় মরহুমের কফিন বাড়ি থেকে ফয়জুলবারী সিনিয়র মাদ্রাসায় আনা হয়। সেখানে খতমে কোরআন, খতমে বোখারী, খতমে মজমত সালাওয়াতে রাসুল ও মিলাদ-কিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরহুমের কফিন সামনে রেখে মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন হাশেমী।
মাওলানা আবুল হাশেম (মাঃজিঃআঃ) রবিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর ইন্তেকালে কর্ণফুলী উপজেলাসহ চট্টগ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনি কর্ণফুলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফয়জুলবারী সিনিয়র মাদ্রাসায় দীর্ঘ ৪০ বছর শিক্ষকতা করেন, যার মধ্যে ২৭ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। ৮১ বছর বয়সী এই মহান আলেম বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে তাঁকে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
তিনি কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। ইসলামী শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তিনি স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
No comments:
Post a Comment