কর্ণফুলী প্রতিনিধি: বাদী চিনেন না আসামিকে, আসামিও চিনেন না বাদীকে! কর্ণফুলী প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি সাংবাদিক আমেরীর গ্রেপ্তার নিয়ে বিতর্ক
চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় দায়ের করা নাশকতা, দ্রুত বিচার আইন ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর এবং আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর মামলায় কর্ণফুলী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক আবেদুজ্জামান আমেরী (৪২) গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাকে যৌথ বাহিনী গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে। মামলার বাদী হালিশহরের মুন্সীপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাজ্জাদ আহমেদ সাদ্দাম (৩৬)। তবে তিনি গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিককে চিনেন না বলে দাবি করেছেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) রাত ১০টার দিকে পটিয়া থেকে র্যাব-৭ ও পুলিশের যৌথ দল আবেদুজ্জামান আমেরীকে গ্রেপ্তার করে হালিশহর থানায় নিয়ে যায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে আবেদুজ্জামান আমেরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তার আবেদুজ্জামান আমেরী পটিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দারখীল এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীন আমিরীর ছেলে। তিনি দৈনিক যুগান্তর ও দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার পটিয়া-কর্ণফুলী প্রতিনিধি এবং কর্ণফুলী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মামলার বিবরণ:
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর বাদীর বাসায় হামলা, দোকানঘর ভাঙচুর, চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকিসহ একাধিক অপরাধ সংঘটিত হয়। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩২৪, ৩৮৫, ৩০৭, ৪২৭, ৪৫৯, ৩৫৮, ৪৪১, ৫০৬(২)/৩৪ ধারাসহ দ্রুত বিচার আইন, ২০০২-এর ৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাদী মামলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আব্দুস সবুর লিটনসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে আবেদুজ্জামান আমেরীর নাম ২৯ নম্বরে।
গ্রেপ্তার নিয়ে বিতর্ক ও প্রতিবাদ:
সাংবাদিক আবেদুজ্জামান আমেরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, মামলার বাদী নিজেই জানিয়েছেন, তিনি গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিককে চিনেন না।
এ ঘটনায় কর্ণফুলী প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক নেতারা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আবেদুজ্জামান আমেরীর মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
সাংবাদিকরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হয় এবং পেশাগত কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করা হয়।
ওসি মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিককে আদালতে তোলা হবে।
No comments:
Post a Comment