সংবাদদাতা: ওসমান হোসাইন, কর্ণফুলী:
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাতটি পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিঃস্ব হয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটে ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা ১৫ মিনিটে, শিকলবাহা ৪নং ওয়ার্ডের মৌলভী বাড়িতে।
কর্ণফুলী মডার্ন ফায়ার সার্ভিস অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসমূহ:
১. মোহাম্মদ মনা (৬০)
২. মোহাম্মদ আবদুর শুক্কুর (৪৫)
৩. মোহাম্মদ আবুল কালাম (৩০), পিতা: মনু মিয়া
৪. মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৫০)
৫. মোহাম্মদ শফিক (৪৭)
৬. মোহাম্মদ ইসহাক (৩৫), পিতা: গুরা মিয়া
৭. মোহাম্মদ লেদু (৩০), পিতা: মোহাম্মদ লাল মিয়া
স্থানীয়রা জানান, গভীর রাতে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পেয়ে তারা দ্রুত ছুটে আসেন এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। তবে ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই আগুনে সাতটি পরিবারের ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। আশপাশের ঘরবাড়ি ও গৃহপালিত গবাদিপশু স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতি ও আহতদের অবস্থা:
কর্ণফুলী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩৬ লাখ টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আরও দ্বিগুণ সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আহত হয়েছেন দুইজন-
১. মোহাম্মদ ইব্রাহিম: আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত
২. মোহাম্মদ শফিক: গবাদিপশু উদ্ধার করতে গিয়ে দগ্ধ
আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের চ্যালেঞ্জ:
সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান আরও জানান, সরু রাস্তার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সরাসরি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়ে। ফলে পানি ও সরঞ্জাম নিয়ে অনেক কষ্ট করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানান, ঘরে থাকা গরু বিক্রির জন্য জমানো নগদ অর্থসহ সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
প্রশাসনিক অবস্থান:
সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সহযোগিতা করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা জান্নাত ফোন রিসিভ করেননি। জানা গেছে, তিনি ঢাকায় সরকারি প্রশিক্ষণে অবস্থান করছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা বলেন, “আগামী রবিবার পিআইও’র (প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা) সঙ্গে আলোচনা করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা করার চেষ্টা করবো।
No comments:
Post a Comment