একুশে মিডিয়া, ডেস্ক:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অংশগ্রহণকারী এক পরীক্ষার্থী অসাধু উপায় অবলম্বনের চেষ্টাকালে হাতেনাতে আটক হয়েছেন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ৩০৪ নম্বর কক্ষ থেকে মুনতাসির কাদের তাওসিফ (রোল: ৪৬১৩০৬২১) নামের ওই পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা এবং চান্দগাঁও হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এদিন পরীক্ষা শুরু হয় বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ হয় ১২টা ৩০ মিনিটে। পরীক্ষা শুরুর প্রায় আধাঘণ্টা পর তাওসিফ তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে শাফায়েত আহমেদ (সিহান) নামের এক বন্ধুর কাছে পাঠান। তবে বন্ধু বার্তাটি দেখার আগেই হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তারিকুল হাসান চৌধুরীর নজরে বিষয়টি ধরা পড়ে।
তাকে তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বের করে ডিন অফিসে নেওয়া হয় এবং পরে পুলিশের উপস্থিতিতে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার সঙ্গে কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
রাবি থেকে আগত সমন্বয় টিমের ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “চবির পরিদর্শকদের ধন্যবাদ জানাই। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় বড় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে ছেলেটি কোনো চক্রের সঙ্গে জড়িত নয়।”
রাবির ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাবিবুল ইসলাম বলেন, “আমরা তার পারিবারিক অবস্থা, বন্ধুর প্রতিক্রিয়া ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পেরেছি-সে মূলত একাকীভাবে এই কাজটি করেছে, এর পেছনে কোনো আর্থিক লেনদেন বা সংঘবদ্ধ চক্রের সংশ্লিষ্টতা নেই।”
আটক হওয়া মুনতাসির কাদের তাওসিফ জানান, “আমি কোথাও কোচিং করিনি, ভালোভাবে প্রস্তুতিও নিইনি। শাফায়েত আমার ছোটবেলার বন্ধু, সে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তাই ওকে প্রশ্নটা পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু সে তখন ঘুমাচ্ছিল। কোনো চক্র বা প্রশ্ন ফাঁসের বিষয় আমি জানিও না।”
চবির সিনিয়র সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান বলেন, “তাওসিফকে পরিদর্শকেরা মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার পরীক্ষাটি বাতিল করা হয় এবং দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা দপ্তরে আটক রাখা হয়। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দ্বিতীয় শিফটের প্রশ্নপত্র ভিন্ন হওয়ায় প্রশ্নফাঁসের কোনো ঝুঁকি ছিল না। তবে এমন ঘটনায় ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
No comments:
Post a Comment